Monday, January 28, 2019

প্রাণীদের নিয়ে মানুষের যতো কুসংস্কার

পর্ব-১
Photo Credit: www.priyo.com/articles/some-prejudices-review-in-the-society-20170920/
কোন বিষয়ে তথ্য প্রমাণ ছাড়া শুধু প্রচলিত মিথ বা লোককথাকে বিশ্বাস করাই কুসংস্কার। বিংশ শতাব্দীর শেষ দশকে আজ যখন মানুষ মঙ্গলে পাড়ি জমানোর আয়োজন করছে, মহাশূন্যে বসতি স্থাপনের তোড়জোড় করছে, বিভিন্ন মরণ ব্যাধির বিরুদ্ধে তার অস্ত্রকে করে তুলেছে আরো শাণিত, মাতৃগর্ভের বাইরে সন্তান ধারণের চিন্তা করছে ঠিক সে সময়েও কিছু হাস্যকর কুসংস্কার সারা পৃথিবীর মানুষ লালন করে আসছে। কোন কোন সংস্কারকে আমরা কুসংস্কার বলি, কোন কোনটাকে ভালো মন্দ কিছুই না বলে প্রশ্রয়ের দৃষ্টিতে দেখি । যেমন অনেকে ১৩ সংখ্যাটিকে এড়িয়ে চলেন । আনলাকি থার্টিন বেশ প্রচলিত একটি কুসংস্কার । ভ্রান্ত বিশ্বাস-সংস্কারের মধ্যে যেগুলোর কোন প্রামাণিক ভিত্তি নেই ।  পরীক্ষার দিন ডিম খেতে বারণ। তাতে নাকি পরীক্ষা খারাপ হয় । সন্তান জন্মাবার পর মা ও শিশুকে প্রায় এক মাস থাকতে দেয়া হয় আঁতুড় ঘরে । এই আতুঁড় ঘর হলো বাড়ির মধ্যে সবচেয়ে নোংরা একটি ঘর । এই একমাস প্রসূতি মাতাকে এই আঁতুড় ঘরে প্রায় বন্দী করে রাখা হয়, অস্পৃশ্য করে রাখা হয় । অনেকেই ভাবেন আত্মার সাথে আত্মার যোগাযোগ ঘটে টেলিপ্যাথির মাধ্যমে । আধ্যাত্মিক উপায়ে অনেককিছু অর্জন করা যায় । যদিও এধরনের কোন বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমা এখনো পাওয়া যায় নি । ভাঙা আয়না নিয়ে অনেক দেশেই রয়েছে বদ্ধমূল ভ্রান্ত বিশ্বাস । বাংলাদেশে কুসংস্কারে বিশ্বাসী অনেকে মনে করেন, ভাঙা আয়নায় মুখ দেখলে আয়ু কমে যায় । বিভিন্ন পশুপাখি নিয়েও প্রচুর কুসংস্কার রয়েছে মানুষের মনে । গভীর রাতে পেঁচার ডাক শুনলে অমঙ্গল আশঙ্কায় অনেকেরই গা ছমছম করে । বিভিন্ন প্রাণীদের নিয়ে সারা পৃথিবী ব্যাপী প্রচলিত এরকম কিছু কুসংস্কার নিয়ে আমি লেখার চেষ্টা করছি। আশা করি আপনারা সাথে থেকে উৎসাহ দিবেন। 
প্রাথমিকভাবে যেসব প্রাণীদের নিয়ে প্রচলিত কুসংস্কারগুলো নিয়ে এখানে আলোচনা করবো সেসব প্রাণীর সাধারণ পরিচয় তুলে ধরা হল-
১। সাপঃ সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী। এরা Chordata পর্বের Reptilia শ্রেণির শীতলরক্তবিশিষ্ট প্রাণি।
২। ডলফিনঃ এরা স্তন্যপায়ী জলজ প্রাণী। এরা পানিতে বসবাসের জন্য বিশেষভাবে অভিযোজিত হয়েছে।
৩। গিরগিটিঃ এরা সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী। এরা Chordata পর্বের Reptilia শ্রেণির অন্তর্গত Squamata বর্গের প্রাণী।  
৪। বিড়ালঃ এরা মাংসাশী স্তন্যপায়ী প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Felis catus।
৫। বাদুড়ঃ এরা Chiroptera বর্গের উড়ুক্কু স্তন্যপায়ী নিশাচর প্রাণী। 
৬। প্যাঁচাঃ এরা নিশাচর পাখি। বৈজ্ঞানিক নাম Athene cunicularia।
৭। কুকুরঃ এরা মাংসাশী স্তন্যপায়ী প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Canis sp.।
৮। কাকঃ এরা প্রকৃতির ঝাড়ুদার নামে পরিচিত এবং Corvus গণের পাখি। 
৯। টিকটিকিঃ এরা সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Hemidactylus flaviviridis।
১০। ময়ূরঃ এরা Galliformes বর্গের পাখি। বৈজ্ঞানিক নাম Pavo cristatus। 
১১। হাতিঃ এরা সর্ববৃহৎ স্থলের স্তন্যপায়ী প্রাণী। পৃথিবীতে আফ্রিকান ও এশিয় এই দুইরকম হাতি রয়েছে। বৈজ্ঞানিক নাম Elephus maximus।
১২। প্রজাপতিঃ এরা Lepidoptera বর্গের দিবাচর পতঙ্গ। 
১৩। ইঁদুরঃ এরা Rodentia বর্গের স্তন্যপায়ী ক্ষতিকর প্রাণী। 
১৪। শূকরঃ এরা Artiodactyla বর্গের স্তন্যপায়ী প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Sus sus।
১৫। শিয়ালঃ এরা মাংসাশী স্থন্যপায়ী প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Canis aureus। 
১৬। নেকড়েঃ এরা মাংসাশী স্তন্যপায়ী প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Canis lupus।
১৭। ব্রাহ্মিনি চিলঃ এরা শিকারি পাখি। বৈজ্ঞানিক নাম Haliastur indus।
১৮। র‍্যাটল স্নেকঃ এরা সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Vipera russelli।
১৯। ব্যাঙঃ এরা উভচর প্রাণী। 
২০। নীলকন্ঠ পাখিঃ এরা ফলাহারি পরিযায়ী পাখি। বৈজ্ঞানিক নাম Coracias benghalensis।
২১। ব্লাক বিটলসঃ এরা Coleoptera বর্গের অন্তর্গত কীটপতঙ্গ। 
২২। অ্যালবেট্রসঃ এরা Diomedeidae পরিবারের সামুদ্রিক পাখি। 
২৩। তেলাপোকাঃ এরা খুব পরিচিত ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ। বৈজ্ঞানিক নাম Periplaneta americana।
২৪। মৌমাছিঃ এরা মানুষ ব্যতিত সবচেয়ে ভালো সামাজিক প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Apis indica।
২৫। ঝিঁঝিঁ পোকাঃ এরা Orthoptera বর্গের কীটপতঙ্গ। 

সংকলনেঃ মোঃ আব্দুস সামাদ, সাবেক শিক্ষার্থী, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, ঢাবি। 
চলবে................

3 comments:

  1. ধন্যবাদ। অনেক মজার মজার তথ্য পেলাম........

    ReplyDelete
  2. waiting for your update..hope will get soon....

    ReplyDelete