Wednesday, February 13, 2019

ময়ূরঃ ডেভিল আই!! হেরার বাহন!!


পর্ব-১১
Photo Credit: artuk.org
ময়ূর দক্ষিন এশিয়ার একটি সুন্দরতম পাখি। এই পাখীকে নিয়েও দেশে-বিদেশে নানা মিথ, কুসংস্কার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে এসব মানুষ আর আমলে না নিলেও একসময় এগুলো খুব জনপ্রিয় ছিলো। এরকম কিছু কুসংস্কার নিয়ে আজকের পর্ব-

আমরা ছোটবেলায় ময়ূরের পেখম বইয়ের ভাঁজে তেল দিয়ে রেখে দিতাম। আর ভাবতাম সেখান থেকে নতুন পেখম জন্মাবে!! মজার না?? যদিও কখনো সেই পেখম বাচ্চা দেয়নি। তবে আমরা তা করেই যেতাম। আর ময়ূরের নৃত্যে যে বৃষ্টি আসে তাও ছোটবেলায় মুখে মুখে শুনে এসেছি।
এ তো গেলো আমাদের দেশের কথা। এখন একটু বাইরে যাওয়া যাক।

ময়ূর ভারতের জাতীয় পাখি। ভারতে এই পাখিটির পর্যাপ্ততা ও ভারতীয় সংস্কৃতির অংশ হিসেবে একে জাতীয় পাখি করা হয়েছে। এই পাখিটিকে লাবণ্য ও সৌন্দর্যের প্রতীক মনে করা হয়। তবে মজার ব্যাপার হলো- কিছুদিন আগে ভারতীয় একজন বিচারক মহেশ শর্মা বলেন যে, ময়ূরকে ভারতের জাতীয় পাখী করার কারণ হলো “ময়ূর ধর্মপরায়ণ পাখি” এবং “আজীবন কৌমার্য পালন করে”। শ্রীকৃষ্ণের মাথার সিকি পাখা হিসেবে ময়ূরের পাখনার ব্যবহারকে তিনি ময়ূরের চিরকুমারত্বের প্রমাণ হিসেবে পেশ করেছেন। হায়রে কুসংস্কার!!!!
“ময়ূর অশ্রুপান করে গর্ভধারণ করে” এমন একটা কুসংস্কারও ভারতের বিভিন্ন যায়গায় প্রচলিত আছে।
ভারতের বিভিন্ন অংশে প্রচলিত একটি কুসংস্কার হলো-ময়ূর তার সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে হারালে সে মারা যায় বা সারাজীবন একাকী থাকে। কোন এক দেবীর অভিশাপের কারণে নাকি ময়ূরের এই অবস্থা!!
ভারতীয় পুরাণ অনুসারে, দেবতা ইন্দ্র মাঝে মাঝে প্রাণিতে রূপান্তরিত হতেন, আর সেই প্রাণিটি ছিলো ময়ূর। ভারতে এও বিশ্বাস করা হয় যে, ময়ূরের পালকের স্পটগুলো আসলে পুঞ্জাক্ষি, যা হাজার হাজার চোখের সমন্বয়ে গঠিত।
ভারতীয় উপমহাদেশে বাড়ির বাইরে বের হবার সময় ময়ূরের তীব্র ডাক শোনা অশুভ লক্ষণ মনে করা হয়।
আরো একটি প্রচলিত কুসংস্কার হলো-ময়ূর নাকি স্বর্নকে ঘৃণা করে এমনকি তারা স্বর্নের কাছে পর্যন্ত যায়না।
ভারতের অনেকাংশে প্রচলিত যে, ময়ূর নৃত্য করলে নাকি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে এবং অস্বাভাবিকভাবে ময়ূর কান্না করার অর্থ হলো বাড়ির কারো মৃত্যু সন্নিকটে।
Photo Credit: pinterest.com

তিব্বতের বৌদ্ধরা ময়ুরের ছয়টি পেখম দিয়ে তৈরি হাতপাখা পানি শুদ্ধতার জন্য ব্যবহার করে থাকে। তারা এই বিশেষ হাতপাখাকে মন্ত্রসহ পানির উপর দিয়ে নাড়াতে থাকে। তাদের ধারণা এতে পানি বিশুদ্ধতা লাভ করে। ময়ুরের পেখম শক্তি ও বিশুদ্ধতার ক্ষমতা বহন করে।

চীনে প্রচলিত আছে যে, ময়ূর শৌর্যবির্য ও সৌন্দর্যের প্রতীক। এদের পুনর্জীবন লাভ করার ক্ষমতা রয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের অধিবাসীরা মনে করে যে, ময়ূর পৃথিবীতে শয়তানের রূপ।

ইরাকের ইয়াজিদি সম্প্রদায় ময়ূরকে তাদের দেবতা জ্ঞান করে তাকে “ময়ূর দেবতা” বলে ডাকে।
গ্রীক মিথলোজি অনুসারে, ময়ূর রাজা জিউসের স্ত্রী হেরার বাহন।
Photo Credit:pinterest.com

ইউরোপীয়রা ময়ূরকে “শয়তান পাখি” হিসাবে বিবেচনা করে থাকে। তাদের ধারণা ময়ূরের পেখমের “ডার্ক স্পট” গুলো আসলে “ডেভিল আই” বা “শয়তানের চোখ”।




বিঃ দ্রঃ এসব নিছকই কুসংস্কার। এর সাথে বিজ্ঞানের কোন সম্পর্ক নেই।
চলবে.........

Monday, February 11, 2019

টিকটিকিঃ ঠিক ঠিকি!!!

Photo Credit: https://ebela.in/health/5-superstitions-of-bengalee-people-dgtl-1.283347

পর্ব-১০

টিকটিকি একধরণের বৃক্ষবাসী সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী। খুব নিরীহ প্রাণী হিসেবে এরা ঝোপঝাড়ের মাঝে লুকিয়ে থাকতে ভালবাসে। পোকামাকড় খেয়ে এরা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তবে এই নিরীহ প্রাণীটিকে নিয়েও দেশে-বিদেশে অনেক কুসংস্কার প্রচলিত আছে।
টিকটিকি নিয়ে আমাদের দেশে খুব মজার একটা কুসংস্কার প্রচলিত আছে। ছোটবেলায় দেখতাম দাদি-নানিরা গল্প করার সময় যদি টিকটিকি আওয়াজ করতো তবে তারাও মাটিতে তিনবার টোকা দিয়ে ঠিক ঠিক বলে উঠতেন। অর্থাৎ উনারা সত্যি কথা বলেছেন। টিকটিকি তার সাক্ষ্য দিয়ে টিক..টিক..টিক অনেকটা ঠিক..ঠিক..ঠিক বলে তা জানিয়ে দিলো। ভারত বাংলাদেশের অনেক এলাকায় এই কুসংস্কার চলে আসছে।

আমাদের দেশে টিকটিকি নিয়ে আরেকটি প্রচলিত কুসংস্কার হলো- টিকটিকির লেজ মঙ্গলবার কেউ কাটতে পারলে সেই লেজের তৈরি তাবিজ নাকি শিশুদের বিছানায় মুত্রত্যাগ রোগের নিরাময় ঘটায়। (ফাজলামি)
প্রাচীন গ্রীস ও রোমের অধিবাসীরা টিকটিকিকে সৌভাগ্য ও জ্ঞানের প্রতীক মনে করতো। তারা মৃত্যুর পরের জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধির আশায় কবরের গায়ে টিকটিকির ছবি এঁকে রাখতো।

স্পেন ও পর্তুগালের লোকেরা সৌভাগ্য আনার জন্য ঘরের দেয়ালে টিকটিকির ছবি এঁকে রাখে। গর্ভবতী মহিলারা টিকটিকি দেখলে মনে করে যে, তাদের অনাগত সন্তান সৌভাগ্যবান ও দীর্ঘায়ু লাভ করবে।
ইউরোপের অনেক দেশে এটা বিশ্বাস করা হয় যে, টিকটিকি মানুষ ও গৃহপালিত পশু-পাখীকে সাপের হাত থেকে রক্ষা করে। আর এজন্যই অনেক আস্তাবলে টিকটিকির ছবি আঁকা দেখা যায়।
ইউরোপে আরেকটা কুসংস্কার প্রচলিত আছে যে, যদি কেউ টিকটিকির পিত্তরস কোন ফলবান গাছে লাগিয়ে দেয়, তবে ঐ গাছের কোন ফল নষ্ট হবেনা।

রেড ইন্ডিয়ানসরা টিকটিকিকে সৌভাগ্যের প্রতীক মনে করে। তাদের ধারণা, টিকটিকি শিশুদের বিভিন্ন বিপদআপদ থেকে রক্ষা করে। শিশুরা কোন বিপদে পড়লে টিকটিকি টিক..টিক..টিক.. শব্দ করে বড়দের সতর্ক করে দেয়। সোনালী লেজের টিকটিকি দেখা অর্থ হলো টাকা আসবে। সেজন্য তারা এইধরণের টিকটিকিকে “মানি লিজার্ড” বলে থাকে। দুঃখের বিষয় এইধরণের টিকটিকি এখন বিলুপ্তপ্রায়।
ভারতীয় “গোলী শাস্ত্র” মতে কারো সামনে টিকটিকি পড়লে তা সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য কি নিয়ে আসবে তা টিকটিকি কোথায় ও কিভাবে পড়লো তার উপর নির্ভর করে। যেমনঃ
 -কোন মানুষের ডান চোখের উপর টিকটিকি পড়ার অর্থ হলো সেই লোক তার কাজে ব্যর্থ হবে;
-যদি কারো কপাল বরাবর টিকটিকি পড়ে তবে তার বিচ্ছেদ নিশ্চিত;
-ডান ঘাড়ে পড়ার অর্থ এখন খারাপ সময়;
-পায়ের উপর দিয়ে টিকটিকি চলে যাওয়া অর্থ এখন তার জন্য বড় সুসময়;
-একসাথে চারটির নিচে টিকটিকি দেখার অর্থ সৌভাগ্য;
- একসাথে চারটির বেশি টিকটিকি দেখার অর্থ দুর্ভাগ্য।

মজার একটা কুসংস্কার প্রচলিত আছে বান্টু উপজাতিদের মধ্যে। তারা বিশ্বাস করে যে, সৃষ্টিকর্তা তার সকল সৃষ্টি শেষ হলে, গিরগিটীকে দিয়ে একটি বার্তা পাঠালেন মানুষের নিকট। বার্তাটি হল মৃত্যুর পর মানুষ আবার পুনর্জীবন লাভ করবে। কিন্তু এই বার্তা টিকটিকি আড়িপেতে শুনে ফেলে। কিন্তু সে বার্তাটা ঠিকমতো না বুঝে দ্রুত মানুষের কাছে গিয়ে বার্তা দেয় যে,  মৃত্যুর পর আর ফেরার উপায় নাই। মানুষ সেটাই বিশ্বাস করে। যতক্ষণে গিরগিটী পৌঁছে তার বার্তা দেয়, তখন মানুষ তাকে অবিশ্বাস করে। তাকে মিথ্যাবাদী বলে তাড়িয়ে দেয়।
আজও বান্টু উপজাতিরা টিকটিকি নাকি গিরগিটী কে নায়ক কে ভিলেন তা জানেনা।
 
Photo Credit: https://www.speedextools.com/outdoor-decor/8219-aztec-lizard-xl-indooroutdoor-painted-steel-wall-art--74690.html

বিঃ দ্রঃ এসব নিছকই কুসংস্কার। এর সাথে বিজ্ঞানের কোন সম্পর্ক নেই।
চলবে.........

Sunday, February 10, 2019

কাকঃ ভারত-বাংলাদেশ উল্টা কুসংস্কার।

পর্ব-৯

Photo Credit: stairnaheireann.net
বাংলাদেশ ও ভারতের অনেক জায়গায় কাক নিয়ে বহু কুসংস্কার প্রচলিত আছে। তবে মজার ব্যাপার হলো দেশভেদে এই কুসংস্কার সম্পুর্ন বিপরীত। বাংলাদেশে যে কুসংস্কারটি প্রচলিত আছে তা হলো ঘরের চালে কাক ডাকাকে অশুভ মনে করা। ছোটবেলায় আমরা অনেক কাক তাড়িয়েছি, অশুভ খবর তাড়ানোর জন্য।
কিন্তু অনেক ভারতীয় কাকের বিষ্ঠাকে শুভ মনে করে। তাদের বিশ্বাস কাকের বিষ্ঠা কোনো বাড়ির উপর পড়লে অর্থআগমন নিকটাবর্তী।

কাক কালো কেনো?
কাকের রঙ কালো কেনো? এনিয়ে খুব মজার একটা গ্রীক মিথোলজি আছে, জিউসের পুত্র অ্যাপলোর সাথে কাকের একটা বিরক্তিকর সম্পর্ক রয়েছে। কথিত আছে যে, অ্যাপলোর স্ত্রীর নাম ছিলো করোনিস। সে আইজ্যাক নামের একজন মানুষের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলো। আর এই সম্পর্ক নাকি হয়েছিলো কাকরূপে। সেই ক্ষোভে অ্যাপলো সেই সাদা কাক দুটিকে পুড়িয়ে দেয়। সেই থেকে কাকের রঙ সাদা থেকে কালো হয়ে যায় আর কাকের নাম হয়ে যায় করোনিসের নামানুসারে Corvids বা Crow!!!

Photo Credit: art.alphacoders.com
কাকের কণ্ঠস্বর কর্কশ কেনো?
গ্রীক মিথোলজিতে কথিত আছে যে, অ্যাপলো একটা ভোজন উৎসবের জন্য কাককে জলাশয় থেকে পানি নিয়ে আসার নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী কাক পানি আনতে যায় কিন্তু পথিমধ্যে একটি অপরিপক্ক ডুমুর গাছ দেখে সে অপেক্ষা করতে থাকে ডুমুর পাকা পর্যন্ত। ডুমুর পাকলে তা খাওয়ার পর একটি জলসাপ ধরে নিয়ে অ্যাপলোর কাছে আসে এবং বলে যে, এই সাপটির কারণে তার পানি আনতে দেরি হয়েছে। কিন্তু অ্যাপলো কাকের মিথ্যা কথা ধরে ফেলে এবং অভিশাপ দেয় যে, কাক ডুমুর পাকার আগ পর্যন্ত কখনই পানি পান করতে পারবেনা। সেই থেকে পানির তৃষ্ণায় কাকের গলা শুকিয়ে কর্কশ হয়ে গেছে!!!

কাক এবং প্যাঁচা একে অপরের শত্রু?
প্রাণীদের নিয়ে রচিত মহাকাব্য পঞ্চতন্ত্র অনুসারে, একবার পক্ষীকুল সমবেত হয়ে প্যাঁচাকে তাদের রাজা ঘোষণা করলেন এবং তার রাজ্যাভিষেকের প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেন। সেখানে কাক অনুপস্থিত ছিলো। কাক এসে প্যাঁচার রাজা হওয়ার কথা শুনে হাসলেন এবং বললো যে, প্যাঁচা খুব কুৎসিত, নিষ্ঠুর।
গারুদা (ঈগলরূপি বিষ্ণু) যেহেতু পক্ষীকুলের ভগবান কর্তৃক নিযুক্ত রাজা তাই নিজেরা অন্য রাজা নিযুক্ত করা পাপ হিসেবে বিবেচিত হলো। এর শাস্তিস্বরূপ প্যাঁচার রাজা হওয়া বাতিল হলো। প্যাঁচা যেহেতু নিশাচর তাই সে যখন রাত হলো তখন সব কথা জানতে পারলো কিন্তু এই ভাবলো যে, কাকের আপত্তি ও মন্তব্যের কারণেই সে রাজা হতে পারেনি। সেই থেকে কাক আর প্যাঁচার শত্রুতা!!!
Photo Credit: imgur.com

কুকুরঃ ওলা ওঠা বা কলেরা রোগের পুর্বাভাষ দাতা?????

পর্ব-৮
Photo Credit: digestposts.blogspot.com
গ্রামে প্রায় রাতের বেলায় একদল কুকুর সমস্বরে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকে। কথিত আছে যে, এই চিৎকার চেঁচামেচি অর্থ হলো গ্রামে হয়তো কোন মহামারী আসছে। তার সতর্কতা হিসাবেই কুকুরের এই চিৎকার চেঁচামেচি। গ্রামে ওলা উঠা বা কলেরা রোগের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে এরকম কথা বহুল প্রচলিত ছিলো। কিন্তু এটা কি সত্যিই কুসংস্কার নাকি বিজ্ঞান এ নিয়ে রয়েছে নানা তর্ক-বিতর্ক। তবে অনেকে বলছেন এটা কুসংস্কার নয়। এর পিছনে রয়েছে বিজ্ঞান। 

এ ব্যাপারে বিজ্ঞান বলছে, কুকুর-বিড়ালদের মধ্যে সেন্সটা অনেক বেশি। তাই কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় আগে আবহাওয়া এবং তার পরিমন্ডলের যে পরিবর্তন হয় তা বুঝতে পারে এই শ্রেণির কুকুর-বিড়াল। আর তাই আতঙ্কে কান্না শুরু করে দেয়। তাই অনেকেই বলছেন, বিষয়টির মধ্যে শুধুই কুসংস্কার আছে তা মোটেই নয়। রয়েছে বিজ্ঞানও। 

আমাদের দেশে আরও একটা প্রচলিত কুসংস্কার হলো-খাওয়ার পরে গা মোচড় দিতে নেই, তাতে নাকি খাবার কুকুরের পেটে চলে যায়!!! মজার না?? 

ভারতের কিছু অঞ্চলে প্রচলিত মিথ হলো কুকুরের কামড়ে মহিলারা গর্ভবতী হয়ে যায় এবং কুকুরছানা প্রসব করে!!

প্রাচীন গ্রীস ও রোমের লোকেরা বিশ্বাস করতো যে, কুকুর শরীরের কোন আক্রান্ত অংশ চেটে দিলে সেই স্থান আরোগ্য লাভ করে।
আর ফ্রান্সের প্রচলিত মিথটা শুনবেন? ফরাসীরা বিশ্বাস করে যে, চলার পথে বাম পায়ে কুকুরের বিষ্ঠা লাগা সৌভাগ্য বয়ে আনে।
এন্সাইক্লোপেডিয়া অব সুপারস্টিশন বইয়ের তথ্য মতে, অপরিচিত কুকুর দেখা অতি সৌভাগ্যের প্রতীক। সাতটি আঙ্গুলযুক্ত কুকুর মৃত মানুষের আত্মাকে দেখতে পায়।
ইউরোপের অনেক দেশে কোন দম্পতির চলার পথে মাঝখান দিয়ে কুকুর চলে যাওয়াকে নিকটবর্তি ঝগড়ার পুর্বাভাষ মনে করা হয়।
Photo Credit: http://tristatekennels.com/stop-barking-night/

বিঃ দ্রঃ এসব নিছকই কুসংস্কার। এসবের কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
চলবে............................



Thursday, February 7, 2019

প্যাঁচাঃ ডেভিল এসোসিয়েটস......

পর্ব-৭
Photo Credit: www.thoughtco.com

প্যাঁচা নিয়ে আমাদের দেশে প্রচলিত কুসংস্কার হলো- ঘরের চালে প্যাঁচা বসাকে নিশ্চিত ধ্বংসের প্রতীক মনে করা হয়। গভীর রাতে প্যাঁচার ডাক শোনা অশুভ লক্ষণ। সাদা পেঁচাকে ভারতে মা লক্ষ্মীর বাহন মনে করা হয়।
আসুন এবার একটু বাইরের পৃথিবীতে যাই, একটি প্রাচীন প্রবাদে জানানো হয়েছিল, পেঁচা গান গাইলে জানতে হবে, কারোর মৃত্যু আসন্ন। পেঁচার একটি বিশেষ ডাককেই এখানে গানবলা হয়েছে। ক্যাথলিক সন্ন্যাসীরা পেঁচাকে দীর্ঘকাল ধরে ডেভিলের অ্যাসোসিয়েটবলে বর্ণনা করে এসেছেন।
ইউরোপে প্যাঁচা খুব সুবিধের প্রাণী নয়। বাড়ির আশপাশে তার উড়ানকে অনেকেই মৃত্যুর পূর্বাভাস বলে মনে করেন। এ ভাবনার পেছনে কাজ করছে উইচক্রাফ্‌ট নিয়ে ইউরোপীয়দের দীর্ঘকালীন সংস্কার। সাদা পেঁচা উইচদের অ্যাসোসিয়েট হিসেবে প্রসিদ্ধ। উইচদের সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব সেখানে দীর্ঘকালীন। তবে এ ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন জে কে রাওলিং। হ্যারি পটারের অ্যাসোসিয়েট হেডইউগ একটি সাদা পেঁচা। সে কখনোই অশুভনয়।


Photo Credit: twentytwowords.com








বিঃদ্রঃ এগুলো একেবারেই কুসংস্কার। এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

Tuesday, February 5, 2019

বাদুড়ঃ রহস্য ও কুসংস্কার.....

পর্ব-৬


বাদুড় এমন একটি প্রাণি যাকে নিয়ে পৃথিবীর প্রায় সকল অঞ্চলে নানা উপকথা, কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে। আমাদের দেশে একটি প্রচলিত কুসংস্কার হলো-বাদুড় ঘরে ঢুকলে মৃত্যু হবে - সাধারণত, বাদুড়কে ভৌতিক প্রাণী বা পাখি হিসেবেই ধরা হয়। তাই বাদুড় ঘরে ঢোকাকে অশুভ হিসেবেই মানা হয়। কিন্তু এর পিছনে যুক্তিটা হল, বাদুড় রক্ত খায়। আর রক্তের স্বাদ পাওয়া কোনও প্রাণী ঘরে ঢোকা মানে বিপদেরই সম্ভাবনা। 

পোল্যান্ড এবং চীনে বাদুড়কে সুখ ও দীর্ঘজীবনের প্রতীক মনে করা হয়। তবে পুরাণ কাহিনিতে মনে করা হয় যে, বাদুড় ছদ্মবেশে শয়তানের আত্মা বহন করে। তাই এদের এড়িয়ে চলা হয়।

বাদুড়কে দক্ষিণ আমেরিকার মায়া ও আজটেক সভ্যতায় মৃত্যুর আগ্রদূত বলে মনে করা হত। বাদুড় খুবই রহস্যময় প্রাণী। ইউরোপের সংস্কৃতিতে তার স্থান পরলোক আর ইহলোকের মাঝামাঝি একটা এলাকায়। বাদুড় নিয়ে মৃত্যুসংক্রান্ত সংস্কার কম নেই। কুসংস্কার বিশ্বের প্রত্যেক দেশ দেশে বা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে আছে। কিছু কুসংস্কার দূরিভূত হচ্ছে আবার অনেক সময় নতুন নতুন কুসংস্কারের তৈরি হচ্ছে। আগামী পর্বে আমরা আরোও কিছু কুসংস্কার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো।
Photo Credit: geneticliteracyproject.org

বিঃদ্রঃ এগুলো একেবারেই কুসংস্কার। এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

Monday, February 4, 2019

বিড়ালঃ অশুভ আত্মার বাহক....????

পর্ব-৫
Photo Credit: prettylittercats.com

ভারতীয় উপমহাদেশে কালো বিড়ালকে অশুভ মনে করা হয়। যাত্রাপথে কালো বিড়াল দেখাকে অশুভ মনে করা হয়। কোনো আলোচনার মাঝে কালো বিড়াল যেতে দেখাকে অশুভ মনে করা হয়। কেউ বিড়াল মেরে ফেললে তাকে বিড়ালের ওজনের সমপরিমাণ লবণ নদীতে ফেলতে হবে বলে একটা কুসংস্কার আজো প্রচলিত আছে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায়। আরও একটা কুসংস্কার আছে যে, বিড়াল মারার সময় কথা বলতে হয়না; কথা বললে বিড়াল মরবে না। ব্রিটেনে বিয়ের অনুষ্ঠানে কালো বিড়াল দেখলে ঐ বিয়ে শুভ এমনটি মনে করা হয়। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের নাবিকেদের স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের সমুদ্র থেকে নিরাপদে ফিরে আসার কামনায় কালো বিড়াল পালে। রাশিয়াতে বাচ্চাদের দোলনায় বিড়াল রাখা হয় শয়তানের কুনজর হতে বাচ্চাকে বাঁচাতে। প্রাচীন মিশরীয়রা বিশ্বাস করতো যে, বিড়াল পৃথিবীতে নয়(০৯) বার জন্ম নেয়।

প্রাচীন মিশরীয়রা বিড়ালকে ঐশ্বরিক সম্মান প্রদর্শন করতো এবং কোনও অবস্থাতেই তারা একটা বিড়ালকে মারতও না বা হত্যা করতো না, যদি কেউ বিড়াল হত্যা করতো তবে তারও শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড। ঘরের মানুষ সবাই একটা বিড়ালের মৃত্যুকে নিয়ে শোক প্রকাশ করতো এবং মৃতদেহটিকে মাটি দেয়া হতো যথেষ্ট উৎসব পালন করার মধ্য দিয়ে। প্রাচীন মিশরীয় কুসংস্কার ছিল যে, তারা বিশ্বাস করতো একটা বিড়ালের নয়টি জীবন থাকে।

পরবর্তী শতাব্দীগুলোতে সর্বত্র ইউরোপ ব্যাপী বিড়াল জাদুকরদের সাথে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে পড়েছিল। এমনকি আজ পর্যন্ত কোনও ঐতিহ্যবাহী ডাইনীর বর্ণনা তার কালো বিড়ালটি ছাড়া হয় না। বলা হয়ে থাকে যাদুকরীরা প্রায়ই নিজেদেরকে কালো বিড়ালের আকারে পরিবর্তন করে ফেলে। এই ধরনের বিড়ালেরা তাদের গৃহিণীদের রক্ত খেয়ে বেঁচে থাকে বলে দোষারোপ করা হয়। এক সময় অনেক লোকেই বিশ্বাস করতো যে, মে মাসে বিড়াল ছানা জন্মালে তা হবে বিশেষভাবেই মৃত্যুর সাথে জড়িত এবং যাদুকরী ডাইনীদের কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট, সুতরাং জন্মের সাথে সাথে তাদেরকে পানিতে ডুবিয়ে মেরে ফেলতে হবে। একটি বিড়ালের উপস্থিতিতে তারা পারিবারিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেও অনীহা প্রকাশ করতো, জেনো সেটা পরিচিত একটি ডাইনী অথবা এমনকি গোপনে উপস্থিত একজন ডাইনী। পূর্ব ইউরোপে বিড়ালের গায়ে প্রায়ই আড়াআড়ি দাগ দিয়ে রাখা হতো যাতে তারা ডাইনীতে রূপান্তরিত হতে না পারে। আর তখন ফ্রান্সে ডাইনীতে রূপান্তরিত হবার সম্ভাবনা আছে এরূপ বিড়ালকে প্রায়ই খাঁচায় বন্দী করে পুড়িয়ে মারা হতো।

সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল ঐ বিড়ালটি যেটি ছিল সম্পূর্ণ কালো। যদি একটি কালো বিড়াল কোনও লোকের যাত্রা পথের সামনে দিয়ে আড়াআড়িভাবে হেঁটে যেত তবে বিশ্বাস করা হতো এই ঘটনা তার জন্য সৌভাগ্য এনে দেবে এবং সে যে আশা করবে তা পূর্ণ হবে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন ও বেলজিয়ামে এর বিপরীতটা ভাবা হতো, তাদের মতে সাদা এবং ধূসর রঙের বিড়ালই বেশি পছন্দনীয়, তাদের মতে কালো বিড়ালই শুধু মাত্র দুর্ভাগ্য বয়ে আনে। এই বিশ্বাসের বিকল্প মতাবলম্বীরা যাই হোক এই মত প্রকাশ করে যে, যদি একটি কালো বিড়াল পেছন ফিরে যায় অথবা পেছন দিক থেকে তাকে দেখা হয় তাহলে তা প্রকৃতপক্ষেই একটা অমঙ্গলের চিহ্ন হতে পারে। তৎসত্ত্বেও একটা কালো বিড়ালের প্রতীক সৌভাগ্যের অগ্রদূত হিসেবে অন্তত ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জে সর্বব্যাপী স্বীকৃত। সেখানে একটা কালো বিড়ালকে ছুঁয়ে দেয়াও সৌভাগ্যের। সমস্ত ইউরোপ ব্যাপী সাদা বিড়ালকে ব্যাপকভাবে অবিশ্বাস করা হয়। আর সেই সময়ে দলছাড়া কচ্ছপের খোলার মতো বিড়ালকে ঘরে অত্যন্ত বেশি করে অপ্রত্যাশিত মনে করা হয়, কারণ লোকে ভয় করে এটা সাথে করে মন্দ ভাগ্য নিয়ে আসে। তাদের আরও বিশ্বাস এই যে, কখনোই বিড়ালকে টাকা দিয়ে ঘরে কিনে আনতে নেই, যদিও বা কেউ দুর্ঘটনাক্রমে একটা কিনে ঘরে আনে তবে সেটা কখনোই ভালো ইঁদুর ধরা হবে না।

পূর্বে বিশ্বাস করা হতো যদি বিড়াল হাঁচি দেয় তার অর্থ অবশ্যই বৃষ্টি আসবে, কিন্তু যদি বিড়ালটি একসাথে তিনবার হাঁচি না দেয় তার অর্থ সমস্ত পরিবারের লোকেরা ঠাণ্ডায় ভুগবে। যদি কোনও বিড়াল আগুনের দিকে পেছন দিয়ে বসে তার অর্থ সে জানে একটা ঝড় অথবা একটা ঠাণ্ডা আবহাওয়া আগত প্রায়। আর যদি একটি বিড়াল একটি টেবিলের পা আঁচড়ায় তা অতি সত্ত্বর আবহাওয়ায় একটা পরিবর্তন এর বিপদ সংকেত দেয়। বিড়াল যখন নিজেদের ধৌত করে অথবা পরিত্যক্ত জিনিস নিয়ে আমোদ প্রমোদ খেলা করে তখন বুঝতে হবে যে জলীয় আবহাওয়া আসন্ন। কিন্তু তারা যদি এই কাজের জন্য দরজাটা বেছে নেয়, তাহলে সেটাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও কোনও স্থানে একজন ধর্মযাজকের গৃহে উপস্থিতির নিশ্চিত ইঙ্গিত বলেই ধরে নেয়া হয়। যদি একটি বিড়াল তার মুখের বাম পাশের কানের ওপর পর্যন্ত ধুতে থাকে তার অর্থ হবে একজন মহিলার গর্ভে সন্তান আসার পথে রয়েছে, যদি সে ডান কানের ওপর ধোয় তাহলে বুঝতে হবে মহিলার গর্ভে পুরুষ সন্তান আসবে।

সদ্য বিবাহিত দম্পতির কাছে কনের পাশ ঘেঁষে যদি একটি বিড়াল উপস্থিত হয়, তা হবে মঙ্গলের, কিন্তু বিড়ালটি যদি কোনও মৃতদেহের ওপর দিয়ে লাফিয়ে পার হয় তাহলে তাকে অবশ্যই ধরে মেরে ফেলতে হবে। কারণ মনে করা হয় এতে মৃতের আত্মা নরকে যাবে। আগে বিশ্বাস করা হতো বিড়ালকে লাথি মারলে তার গেঁটে বাত হবার সম্ভাবনা আছে। লোকদেরকে আরও হুঁশিয়ার করে দেয়া হতো, তারা জেনো একটা বিড়ালকে তাদের শিশুদের বিছানায় শুতে না দেয়, কারণ বিড়াল তাদের শ্বাসকে চুষে নিয়ে তাকে মেরে ফেলতে পারে।

গণ ওষধিতে উপদেশ দেয়া হয় যে, মে মাসে চোখের ওপর দিয়ে আড়াআড়িভাবে একটা বিড়ালের লেজ টেনে নিলে ফুলে ওঠা টিউমার এবং আঁচিল সেরে যায়, নাকের ছিদ্রের মধ্যে একটা বিড়ালের লেজ চেপে প্রবেশ করিয়ে দিলে নাক থেকে রক্ত পড়া ভাল হয়ে যায় এবং দাঁতের ব্যথা ভালো করার জন্য শুকনো বিড়ালের চামড়া মুখের ওপর চেপে ধরতে হয়। আগেকার দিনে কঠিন আঘাত ও ক্ষত চিকিৎসার জন্য বলা হতো যে আস্ত একটা বিড়াল জলপাই এর তেলে সিদ্ধ করে তার থেকে মলম বানিয়ে লাগাতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলে কালো বিড়ালকে অল্প জ্বালে সেদ্ধ করে ঝোল তৈরি করে ক্ষয় রোগ ভালো করার জন্য গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল। পরিবারের অন্যান্য রোগব্যাধি ভালো করার জন্য বলা হতো রোগীকে গোসল দিয়ে সেই গোসলের পানি ধরে রেখে সেগুলো একটা বিড়ালের উপর দিয়ে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে। তাহলে পানি যেভাবে চলে যাবে তার সাথে ঘরের সব রোগ, বালা-মুছিবৎও দূর হয়ে যাবে। বাংলাদেশে অনেকে বিশ্বাস করে যে, বাসর রাত্রিতে বিড়াল মারতে হয় তাহলে বর তার স্ত্রীর অনুগত থাকে।

পূর্বে খনি শ্রমিকেরা বিড়াল শব্দটি উচ্চারণ করত না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা খনির মধ্যে থাকতো এবং যদি একটা বিড়ালকে নিচে খনির মধ্যে দেখা যায় এবং থাকতে দেয়া হয় তাহলে তারা কাজ করতে অস্বীকার করতো। নাবিক ও জেলেরা যদিও তারা একটা সৌভাগ্য প্রদানকারী কালো বিড়ালকে তাদের নৌযানে করে নিয়ে যেতে পছন্দ করতো, কিন্তু বিড়ালটির ডেকের ওপরের মিউমিউ ডাকটি অপছন্দ করতো, কারণ তাদের বিশ্বাস ছিল এটা আসলে একটা দু:সময়ের আভাস বহন করে। আর যদি একটি বিড়াল উত্তেজিত ভাবে খেলা করে তাহলে সেটা দ্বারা বুঝতে হবে যে একটা মধ্যম ধরনের ঝড় আসন্ন। যদি জাহাজের বিড়ালটি জাহাজের বাইরে ফেলে দেয়া হয় অথবা তার সাথে অন্য কোনও প্রকার নিষ্ঠুর আচরণ করা হয় তাহলে যারা এরূপ করবে তাদের উপর অতিশীঘ্রই একটা ভয়াবহ ঝড় এসে তাদের সাজা দেবে। একটা বিড়ালকে কাপবোর্ডের মধ্যে আটক করে রাখা অথবা একটা পাত্রের নিচে ঢেকে রাখা হলে এটা ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে, তাহলে একটা প্রবল বায়ুপ্রবাহ হবে। সমুদ্রগামী নাবিকদের স্ত্রীরা প্রায়ই ঘরে কালো বিড়াল রাখতো, যাতে তাদের সমুদ্রে অবস্থানরত স্বামীদের সৌভাগ্য বজায় থাকে বা তারা সুরক্ষিত থাকে।
Photo Credit: animalpw.blogspot.com

বিঃদ্রঃ এসব একেবারেই কুসংস্কার। এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
চলবে............

Thursday, January 31, 2019

গিরগিটীঃ দূর থেকে নাভির রক্ত শুষে নেয়?? ঈশ্বরের বার্তাবাহক!!!!!

পর্ব-৪
গিরগিটীঃ দূর থেকে নাভির রক্ত শুষে নেয়?? ঈশ্বরের বার্তাবাহক!!!!!
বাংলাদেশের অনেক এলাকার মানুষ বিশ্বাস করে যে, গিরগিটী দূর থেকে মানুষের নাভি দিয়ে রক্ত চুষে নিতে পারে। তাই আমরা ছোটবেলায় গিরগিটী দেখলেই নাভিতে থুতু দিতাম। গিরগিটী নিয়ে আরও একটি ধারণা প্রচলিত ছিলো যে, গিরগিটীর লেজ সোমবারে কাটতে পারলে ঐ লেজ দিয়ে বানানো তাবিজ বাচ্চাদের বিছানায় প্রস্রাব করা বন্ধ করবে।
এবার একটু বাংলাদেশের বাইরে যাওয়া যাক, আফ্রিকার কিছু মানুষ বিশ্বাস করে যে, গিরগিটী যদি কারো ত্বক স্পর্শ করে তবে সেই জায়গাটা অসার হয়ে যায়। চামড়াসহ কেটে ফেলা ছাড়া আর কোন উপায় থাকেনা। এও মনে করা হয় যে, কোন অবিবাহিতা মেয়ের গিরগিটীর চোখে চোখ পড়লে সে আর বর পায়না। সো বি কেয়ারফুল!!!!!!!
মাদাগাস্কার দ্বীপের অধিবাসিরা মনে করে যে, তাদের পুর্বপুরুষের আত্মা গিরগিটী হয়ে পৃথিবীতে আসে। সর্বদা মানুষের ক্ষতি সাধনের জন্য চেষ্টা করে। সেজন্য সেসব মানুষ গিরগিটীকে এড়িয়ে চলে।
মজার একটা কুসংস্কার প্রচলিত আছে বান্টু উপজাতিদের মধ্যে। তারা বিশ্বাস করে যে, সৃষ্টিকর্তা তার সকল সৃষ্টি শেষ হলে, গিরগিটীকে দিয়ে একটি বার্তা পাঠালেন মানুষের নিকট। বার্তাটি হল মৃত্যুর পর মানুষ আবার পুনর্জীবন লাভ করবে। কিন্তু এই বার্তা টিকটিকি আড়িপেতে শুনে ফেলে। কিন্তু সে বার্তাটা ঠিকমতো না বুঝে দ্রুত মানুষের কাছে গিয়ে বার্তা দেয় যে,  মৃত্যুর পর আর ফেরার উপায় নাই। মানুষ সেটাই বিশ্বাস করে। যতক্ষণে গিরগিটী পৌঁছে তার বার্তা দেয়, তখন মানুষ তাকে অবিশ্বাস করে। তাকে মিথ্যাবাদী বলে তাড়িয়ে দেয়।
তাই সেখানকার অধিবাসীরা গিরগিটীকে সৃষ্টিকর্তার বার্তাবাহক হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। তাদের মধ্যে এই বিশ্বাস এতো শক্তিশালী যে, খ্রিষ্টান ধর্মপ্রচারকেরা বান্টুদের মধ্যে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এই কথিত গিরগিটী জিসু খ্রিস্টের সাথে তুলনা করে। এতে তারা বেশ সফলও...।।

বিঃদ্রঃ এগুলো একেবারেই কুসংস্কার। এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

Wednesday, January 30, 2019

ডলফিন কি মানুষে পরিবর্তিত হতে পারে? দেখুন কুসংস্কার কি বলে.............

পর্ব-৩
গোলাপি ডলফিন ও মানুষ!!!!!!!!

আপনি কি কখন গোলাপি ডলফিন দেখেছেন? এরা দক্ষিন আমেরিকা মহাদেশের আমাজন নদীতে বসবাস করে। আমাজানের মানুষের মাঝে প্রচলিত আছে যে, গোলাপি ডলফিন একসময় মানুষ ছিলো। তারা একদিন হঠাত করে মানুষ থেকে গোলাপি ডলফিনে পরিণত হয়। এরা যেকোনো সময় তাদের রূপ পরিবর্তন করে মানুষ থেকে ডলফিনে আবার ডলফিন থেকে মানুষে পরিণত হতে পারে। এরা এখন নাকি লোকালয় থেকে ছোটবাচ্চাদের ধরে নিয়ে যায়। তারপর তাদের মানুষ থেকে গোলাপি ডলফিনে পরিণত করে।  আর একটা কথা শুনবেন? এরা যদি নদীর পাড়ে কোন কুমারী মেয়েকে একা পায় তবে সাথে সাথে মানুষে রূপান্তরিত হয়ে ঐ মেয়েকে ধর্ষণ পর্যন্ত করে!!!!!!!!!!!!
মজার না ব্যপারটা??????????? 

রুপকথার কল্পনায় গোলাপি ডলফিন
  https://banglaupdateknowledge.blogspot.com/
বিঃ দ্রঃ এসব নিছকই কুসংস্কার
চলবে......

Tuesday, January 29, 2019

সাপঃ ওরে বাপরে বাপ.......

পর্ব-২
Photo Credit: inkhammer.wordpress.com
সাপ সম্পর্কে কত রকম কুসংস্কারই না চালু আছে আমাদের মাঝে । সাপুড়েরা নানারকম আষাঢ়ে গল্প করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে চলেছে নিয়মিত । বীণ বাজালে সাপ ছুটে আসে একথা বিশ্বাস করার লোকের অভাব নেই । মালাবার পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী লোকেরা বিশ্বাস করে যে, পুরুষ সাপ সতী ও যুবতী মেয়েদের প্রেমে পড়ে যায়। একবার প্রেমে পড়লে ঐ সাপের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া দুষ্কর। ঐ সাপেরা তাদের প্রেমিকাদের দংশন করেনা। তাই, এখানকার লোকেরা যুবতী মেয়েদের ঝোপ-ঝাড়ের আশেপাশে যেতে দেয়না। সাপ নিয়ে কুসংস্কার বিষয়ে আমার শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নুরজাহান সরকারের লিখা প্রবন্ধে যেসব কুসংস্কার নিয়ে লিখেছেন তা হলো-

সাপের মাথায় মণি আছে!
সাপের মাথায় মণি আছে বলে গ্রামগঞ্জে, চলচ্চিত্রে যে গল্প প্রচলিত আছে তা ভিত্তিহীন। সাপের মাথায় কোনো মণি নেই বা মণি থাকার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও নেই। সাপ তার জীবদ্দশায় প্রথম দিকে ঘন ঘন এবং পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট সময় পর পর খোলস বদলায়। এই খোলস সারা শরীর থেকে খুলে গেলেও মাথার দিকে কিছুটা আটকে থাকে এবং আস্তে আস্তে সেটা শুকিয়ে শক্ত হয়ে খাড়া অবস্থায় রূপ নেয়। এই খোলসে চাঁদনি রাতের আলো কিংবা যে কোনো আলো পড়লে চকচক করে ওঠে। এটা থেকেই সাপের মাথায় মণির ধারণার সৃষ্টি হয়েছে।
Photo Credit: http://hchm.org

সাপ দুধ খায়!
সাপ কখনোই দুধ খায় না। সাপের মুখের গঠন দুধ খাওয়ার উপযোগী নয়। এটি একেবারেই মানুষের তৈরি ভুল ধারণা ও অপপ্রচারসাপ নানা প্রকার পোকামাকড় ও ইঁদুর খেয়ে ফসল সুরক্ষায় ভূমিকা রাখে। কোনো কোনো সাপ শুধু সাপই খায়, যেমন- রাজগোখরা। 

সাপ নিজের বিষ নিজে শোষণ করে!
সাপ নিজের বিষ শোষণ করার কোনো প্রশ্নই আসে না। এ ধারণার জন্ম দিয়েছে সাপুড়েরা। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে লোকজনের অজ্ঞানতার সুযোগে একচেটিয়া ব্যবসা গড়ে তুলেছে তারা। এদেরকে ওঝা বলা হয়। সাপে কাটা রোগীর জন্য মানুষ তাদের ডেকে আনে এবং এসব ওঝারা এমন ভাব দেখায়, যেন যে সাপে কামড় দিয়েছে সে সাপটিকে এনেই বিষ শোষণ করাবে। এজন্য আসার সময় অনেক দিনের ক্ষুধার্থ সাপ রোগীর বাড়ির কাছাকাছি কোনো ঝোপে ছেড়ে দিয়ে আসে। (সাপ মাসের পর মাস না খেয়ে বাঁচতে পারে, তবে দুর্বল হয়ে পড়ে) এরপর রোগীর বাড়িতে এসে কিছুক্ষণ বিড়বিড় করে মন্ত্র উচ্চারণ করে এবং বলে, সাপ বাড়ির কাছে এসে গেছে। এমন ভাব দেখায়, যেন খুঁজে বেড়াচ্ছে এবং একসময় ঝোপে হাত দিয়ে সাপ বের করে নিয়ে আসে। মানুষ সাপুড়ের এই বাহাদুরিতে মুগ্ধ হয়।

সাপের পা যে দেখবে সে রাজা হবে!
আসলে সাপের কোনো পা নেই। সুতরাং রাজা হওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। এটি অপকথন ছাড়া আর কিছুই নয়। সাপের পা দেখার জন্য কিছু অবুঝ লোক কিংবা কোনো শিশু ঝোপঝাড়ে যেতে পারে। এতে সাপে কামড়ানোর আশংকা বেড়ে যেতে পারে।

তন্ত্রমন্ত্র!
ওঝার তন্ত্রমন্ত্র বলে যে কথন রয়েছে, তা ভিত্তিহীন। ওঝা সাপ ধরার জন্য যে ক্ষমতা দেখায় বা সাপের বিষ নামানোর জন্য যে ভাবভঙ্গি করে, তা তন্ত্রমন্ত্রভিত্তিক নয়। ওঝা সাপ ধরার ব্যাপারে যে বিশেষজ্ঞ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। সে বিড়বিড় করে ঠিকই, তবে লোক দেখানো। আসলে এরা বংশপরম্পরায় সাপ ধরার কৌশল রপ্ত করে।
Photo Credit: www.popsci.com

বাঁশির সুরের তালে তালে সাপ দোলে!
বাঁশির কোনো সুরই সাপ শোনে না। সাপুড়েরা বাঁশি বাজানোর তালে তালে মাঝে মধ্যে মাটিতে আঘাত করায় কম্পনের ফলে সাপের অনুভূতি সজাগ থাকে। বাঁশির এদিক-ওদিক দোলানোর ভঙ্গি দিয়ে সাপুড়ে এক আবহ তৈরি করে মানুষকে মুগ্ধ করে। যে সাপ নিয়ে তারা খেলা দেখায় তার সবই প্রায় বিষধর। এতে দর্শকের কাছে সাপুড়েরা বাঁশির বিষয়টিকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে পারে। প্রকৃতপক্ষে এসব সাপের বিষদাঁত ভেঙে ফেলায় এরা বিষ প্রয়োগ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তাই এটা সম্ভব হয়।
Photo Credit: http://www.lightnfocus.com
সাপ ও বেজির যুদ্ধে বেজি পাতা দিয়ে বিষক্রিয়া নষ্ট করে!
সাপ ও বেজির সম্পর্ক ভালো নয়। কারণ বেজি সাপ খায়, বিশেষ করে সাপের বাচ্চা। বেজি প্রধানত প্রচুর ইঁদুর ও পোকামাকড় খায়। সাপের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণেও এর জুড়ি নেই। সাপ যখন প্রথমে মাথা তুলে বেজিকে আক্রমণ করে, তখন বেজি ক্ষিপ্রতার সঙ্গে সাপকে আক্রমণ করে। সাপ যতবার কামড় দিয়ে বিষ ঢালে, ততবারই তা বেজির খাড়া লোমের ওপর গিয়ে পড়ে। বেজি কৌশলে চট করে ঝোপে লুকিয়ে সামান্য বিশ্রাম নিয়ে আবার ফিরে আসে। ইতিমধ্যে সাপ মাথা নামায় এবং বেজি এসেই সাপের মাথা কামড়ে ধরে। বেজির ঝোপে ঢোকার কারণে মানুষ মনে করে সে এক প্রকার পাতা কামড়ের স্থানে ছুঁইয়ে আসে, যে পাতা সাপের বিষ থেকে বেজিকে বাঁচায়। আসলে এর কোনো সত্যতা নেই।

সাপ প্রতিশোধপরায়ণ!
সাপ ইঁদুরকে কামড় দিয়ে তাকে খাওয়ার জন্য খুঁজতে থাকে। ইঁদুর সাপের কামড়ে আশপাশেই অবশ হয়ে পড়ে থাকে। সাপ ইঁদুরটি খুঁজে বের করে খায়। এ দৃশ্য দেখে মানুষ অনুমান করে নিয়েছে, সাপকে কেউ ব্যথা দিলে সে কামড়াবেই। এটা পুরোপুরি সত্য নয়।

সাপুড়েদের মৃত্যু সাপের হাতে!
অসাবধানতায় সাপুড়ের সাপের কামড়ে মৃত্যু ঘটতে পারে। সাপুড়েরা জানে, সাপের বিষদাঁত ভেঙে দিলে আর কোনো ভয় নেই। কিন্তু এটা জানে না যে, বিষদাঁত ভাঙলেও আবার তা গজায়।

বিঃদ্রঃ এসব নিছকই কুসংস্কার।


সংকলনেঃ মোঃ আব্দুস সামাদ, সাবেক শিক্ষার্থী, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, ঢাবি। 
চলবে................

Monday, January 28, 2019

প্রাণীদের নিয়ে মানুষের যতো কুসংস্কার

পর্ব-১
Photo Credit: www.priyo.com/articles/some-prejudices-review-in-the-society-20170920/
কোন বিষয়ে তথ্য প্রমাণ ছাড়া শুধু প্রচলিত মিথ বা লোককথাকে বিশ্বাস করাই কুসংস্কার। বিংশ শতাব্দীর শেষ দশকে আজ যখন মানুষ মঙ্গলে পাড়ি জমানোর আয়োজন করছে, মহাশূন্যে বসতি স্থাপনের তোড়জোড় করছে, বিভিন্ন মরণ ব্যাধির বিরুদ্ধে তার অস্ত্রকে করে তুলেছে আরো শাণিত, মাতৃগর্ভের বাইরে সন্তান ধারণের চিন্তা করছে ঠিক সে সময়েও কিছু হাস্যকর কুসংস্কার সারা পৃথিবীর মানুষ লালন করে আসছে। কোন কোন সংস্কারকে আমরা কুসংস্কার বলি, কোন কোনটাকে ভালো মন্দ কিছুই না বলে প্রশ্রয়ের দৃষ্টিতে দেখি । যেমন অনেকে ১৩ সংখ্যাটিকে এড়িয়ে চলেন । আনলাকি থার্টিন বেশ প্রচলিত একটি কুসংস্কার । ভ্রান্ত বিশ্বাস-সংস্কারের মধ্যে যেগুলোর কোন প্রামাণিক ভিত্তি নেই ।  পরীক্ষার দিন ডিম খেতে বারণ। তাতে নাকি পরীক্ষা খারাপ হয় । সন্তান জন্মাবার পর মা ও শিশুকে প্রায় এক মাস থাকতে দেয়া হয় আঁতুড় ঘরে । এই আতুঁড় ঘর হলো বাড়ির মধ্যে সবচেয়ে নোংরা একটি ঘর । এই একমাস প্রসূতি মাতাকে এই আঁতুড় ঘরে প্রায় বন্দী করে রাখা হয়, অস্পৃশ্য করে রাখা হয় । অনেকেই ভাবেন আত্মার সাথে আত্মার যোগাযোগ ঘটে টেলিপ্যাথির মাধ্যমে । আধ্যাত্মিক উপায়ে অনেককিছু অর্জন করা যায় । যদিও এধরনের কোন বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমা এখনো পাওয়া যায় নি । ভাঙা আয়না নিয়ে অনেক দেশেই রয়েছে বদ্ধমূল ভ্রান্ত বিশ্বাস । বাংলাদেশে কুসংস্কারে বিশ্বাসী অনেকে মনে করেন, ভাঙা আয়নায় মুখ দেখলে আয়ু কমে যায় । বিভিন্ন পশুপাখি নিয়েও প্রচুর কুসংস্কার রয়েছে মানুষের মনে । গভীর রাতে পেঁচার ডাক শুনলে অমঙ্গল আশঙ্কায় অনেকেরই গা ছমছম করে । বিভিন্ন প্রাণীদের নিয়ে সারা পৃথিবী ব্যাপী প্রচলিত এরকম কিছু কুসংস্কার নিয়ে আমি লেখার চেষ্টা করছি। আশা করি আপনারা সাথে থেকে উৎসাহ দিবেন। 
প্রাথমিকভাবে যেসব প্রাণীদের নিয়ে প্রচলিত কুসংস্কারগুলো নিয়ে এখানে আলোচনা করবো সেসব প্রাণীর সাধারণ পরিচয় তুলে ধরা হল-
১। সাপঃ সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী। এরা Chordata পর্বের Reptilia শ্রেণির শীতলরক্তবিশিষ্ট প্রাণি।
২। ডলফিনঃ এরা স্তন্যপায়ী জলজ প্রাণী। এরা পানিতে বসবাসের জন্য বিশেষভাবে অভিযোজিত হয়েছে।
৩। গিরগিটিঃ এরা সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী। এরা Chordata পর্বের Reptilia শ্রেণির অন্তর্গত Squamata বর্গের প্রাণী।  
৪। বিড়ালঃ এরা মাংসাশী স্তন্যপায়ী প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Felis catus।
৫। বাদুড়ঃ এরা Chiroptera বর্গের উড়ুক্কু স্তন্যপায়ী নিশাচর প্রাণী। 
৬। প্যাঁচাঃ এরা নিশাচর পাখি। বৈজ্ঞানিক নাম Athene cunicularia।
৭। কুকুরঃ এরা মাংসাশী স্তন্যপায়ী প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Canis sp.।
৮। কাকঃ এরা প্রকৃতির ঝাড়ুদার নামে পরিচিত এবং Corvus গণের পাখি। 
৯। টিকটিকিঃ এরা সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Hemidactylus flaviviridis।
১০। ময়ূরঃ এরা Galliformes বর্গের পাখি। বৈজ্ঞানিক নাম Pavo cristatus। 
১১। হাতিঃ এরা সর্ববৃহৎ স্থলের স্তন্যপায়ী প্রাণী। পৃথিবীতে আফ্রিকান ও এশিয় এই দুইরকম হাতি রয়েছে। বৈজ্ঞানিক নাম Elephus maximus।
১২। প্রজাপতিঃ এরা Lepidoptera বর্গের দিবাচর পতঙ্গ। 
১৩। ইঁদুরঃ এরা Rodentia বর্গের স্তন্যপায়ী ক্ষতিকর প্রাণী। 
১৪। শূকরঃ এরা Artiodactyla বর্গের স্তন্যপায়ী প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Sus sus।
১৫। শিয়ালঃ এরা মাংসাশী স্থন্যপায়ী প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Canis aureus। 
১৬। নেকড়েঃ এরা মাংসাশী স্তন্যপায়ী প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Canis lupus।
১৭। ব্রাহ্মিনি চিলঃ এরা শিকারি পাখি। বৈজ্ঞানিক নাম Haliastur indus।
১৮। র‍্যাটল স্নেকঃ এরা সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Vipera russelli।
১৯। ব্যাঙঃ এরা উভচর প্রাণী। 
২০। নীলকন্ঠ পাখিঃ এরা ফলাহারি পরিযায়ী পাখি। বৈজ্ঞানিক নাম Coracias benghalensis।
২১। ব্লাক বিটলসঃ এরা Coleoptera বর্গের অন্তর্গত কীটপতঙ্গ। 
২২। অ্যালবেট্রসঃ এরা Diomedeidae পরিবারের সামুদ্রিক পাখি। 
২৩। তেলাপোকাঃ এরা খুব পরিচিত ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ। বৈজ্ঞানিক নাম Periplaneta americana।
২৪। মৌমাছিঃ এরা মানুষ ব্যতিত সবচেয়ে ভালো সামাজিক প্রাণী। বৈজ্ঞানিক নাম Apis indica।
২৫। ঝিঁঝিঁ পোকাঃ এরা Orthoptera বর্গের কীটপতঙ্গ। 

সংকলনেঃ মোঃ আব্দুস সামাদ, সাবেক শিক্ষার্থী, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, ঢাবি। 
চলবে................